ঢাকা , শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ৯ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

​তিন-চারটা বিয়ে কোন ব্যাপার না: শ্রাবন্তী

ডেস্ক রিপোর্ট
আপলোড সময় : ১৯-০২-২০২৫ ০৫:২৮:১১ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ১৯-০২-২০২৫ ০৫:২৮:১১ অপরাহ্ন
​তিন-চারটা বিয়ে কোন ব্যাপার না:  শ্রাবন্তী
টালিউড অভিনেত্রী শ্রাবন্তীর অভিনয়ের চেয়ে ব্যক্তিগত জীবন নিয়েই বেশি চর্চা হয়। দর্শকরা তার বিয়ে বিচ্ছেদ ও নতুন প্রেম নিয়ে বেশি আগ্রহী।এতে অবশ্য যায় আসে না এই সুদর্শনীর। সম্প্রতি ভারতের একটি গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন শ্রাবন্তী। সেখানে ব্যক্তিজীবন নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন। 

অনেক দিন পর রম-কম সিনেমা, ‘বাবুসোনা?—এমন প্রশ্নের উত্তরে শ্রাবন্তী বললেন, হ্যাঁ। আমাদের তো পরিচিতি তৈরিই হয়েছিল এই ধারার সিনেমার মাধ্যমেই। মাঝেমধ্যে এমন সিনেমা বানানো প্রয়োজন। অনেকে বলেন— ‘নাচগানের সিনেমা’! আমার ভালো লাগে এই ‘নাচগানের সিনেমা’।

২৭ বছর ইন্ডাস্ট্রিতে। কত ওঠাপড়া। কীভাবে হাসিমুখে সামাল দেন? অভিনেত্রী বলেন, নিজেকে শক্ত করে রাখতে হয়েছে। আমি মনে করি জীবন একটাই আর আমার জীবন নিয়ে আমিই বাঁচব। আমার বিল কেউ ভরে দেবে না, বাড়ি, গাড়ির মাসিক কিস্তি কেউ ব্যাংকে গিয়ে দিয়ে আসবে না। আমার ছেলেকেও কেউ মানুষ করবে না। আমিই করব এগুলো। 

তিনি বলেন, পাশাপাশি আমাকেও ভালো থাকতে হবে। ঈশ্বরের কাছে আমি কৃতজ্ঞ— মা-বাবাকেও ধন্যবাদ যে আমি এ রকম একটা জীবন পেয়েছি। মা-বাবা যত দিন রয়েছেন, তাদের সান্নিধ্যে রয়েছি। দর্শকদের জন্য আরও ভালো কাজ করতে চাই— এটুকুই। বাকি কে কী বলল, আমার কিছু এসে-যায় না।

বহু চরিত্র রয়েছে, অথচ চোরের চরিত্রে অভিনয় করলেন আপনি? এ বিষয়ে শ্রাবন্তী বলেন, প্রথমে চোরের চরিত্র শুনেই রাজি হয়ে গেছি। নিজের চরিত্রের বাইরে অভিনয় করতে পারলে ভালোই লাগে। কেউ তো বিশ্বাসই করছিল না যে আমি চোরের চরিত্রে অভিনয় করেছি। লন্ডনে মনোরম আবহাওয়ায় শুটিং। নাচগান, মজা— একেবারে কমার্শিয়াল মসলা সিনেমা যাকে বলে।

খুব অল্প বয়সে মা হওয়ার পাশাপাশি অভিনয়ও চালিয়ে গেছেন। এ প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, আমি তো ভাগ্যবান যে অল্প বয়সে মা হয়েছি। আমার ছেলের সঙ্গেই আমি বড় হয়েছি। তিনি বলেন, ১৬ বছর বয়সে মা হয়েছি। তখন দশম থেকে একাদশ শ্রেণি। আজ আমার ছেলে আর আমি বন্ধু। এখন ও আমার অভিভাবক। আমি ওকে ‘রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার’ নাম দিয়েছি। এত শাসন করে আমাকে! আমাকে বলে— তোমার মধ্যে কোনো দিন পরিণীতিবোধ আসবে না! শিশুই থেকে যাবে! আমি বলি— আমার এ রকমই ভালো লাগে।

নিজেকে লড়াই করতে হয়, কখনও ক্লান্ত লাগে না? শ্রাবন্তী বলেন, আমি তো লড়াই করেই যাচ্ছি। আমার ভালো লাগে লড়াই করতে। আর ভেঙে পড়ি মাঝেমধ্যে। তবে তা কাছের মানুষের সামনে। তার পর নিজেকে সামলে নিই। আমি ভীষণ অনুভূতিপ্রবণ। ভেঙে পড়েও নিজেকেই বোঝাই— উঠে দাঁড়াতেই হবে। নিজেকে শক্ত রাখতে হবে। তা না হলে এত বড় রাজত্ব চালাব কীভাবে! মা-বাবা রয়েছেন, আমিই তো খুঁটি আমার পরিবারের।
দীর্ঘ অভিনয় সফরে কোনো আফসোস রয়েছে?—এ প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, আমি নিজেকে নতুন নতুনভাবে আবিষ্কার করতে চাই। আমি চাই আমাকে অন্য কেউ ‘এক্সপ্লোর’ করুক। আমি ছোটবেলা থেকেই অভিনয় করতে ভালোবাসি। আর ঈশ্বরের কৃপায় আমাকে কখনো অভিনয় শিখতে হয়নি। তাই একটাই আক্ষেপ— যদি পরিচালকরা আমাকে আরও একটু ‘এক্সপ্লোর’ করেন।

অনেক দিন  কোনো ধারাবাহিকে কাজ করতে পারছেন না বলে মনে হয়? —এমন প্রশ্নের উত্তরে শ্রাবন্তী বলেন, শুধু আমাদের ইন্ডাস্ট্রি নয়। সব জায়গাতেই পুরুষতান্ত্রিকতার ছাপ রয়েছে। ছোটপর্দায় বরং অভিনেত্রীদের প্রাধান্য বেশি। তবে সত্যি কথা বলতে— বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে আগের তুলনায় নারীকেন্দ্রিক সিনেমা হচ্ছে। তিনি বলেন, রুক্মিণী ‘বিনোদিনী’ করল। আমি ‘দেবী চৌধুরানী’ করছি। তবে ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য যে সিনেমা পাব— সব করব, এমনটিও ঠিক নয়। বরং বাছাই করেই সিনেমা করা উচিত।

ডায়েটে কতটা মনোযোগী, শ্রাবন্তী তো খেতে ভালোবাসেন? এ প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, হ্যাঁ। আমি ভীষণ খেতে ভালোবাসি। আর তা ছাড়া আমার একটা সিনেমার কাজ চলছে। সেখানে আমার চরিত্র খানিক ভারি চেহারার। তাই এ মুহূর্তে ডায়েট করছি না। যা ইচ্ছা হচ্ছে খাচ্ছি। কী যে আনন্দ! তিনি বলেন, তবে বাইরের খাবার পছন্দ করি না আমি। আমার বাড়িতে যিনি রান্না করেন, চিত্ত, তাকে যা বলি বাড়িতে বানিয়ে দেন। বাড়ির খাঁটি উপকরণ দিয়ে তৈরি খাবার। এই তো পরশু বাড়িতে তৈরি বিরিয়ানি খেলাম আমি আর আমার ছেলে। আর হ্যাঁ, জিম করি নিয়মিত। যেদিন জিম করতে পারি না, ৫ কিলো হাঁটি।

সৌন্দর্য প্রসঙ্গে শ্রাবন্তী বলেন, আমি আসলে মায়ের থেকে পেয়েছি। আমার মা ভীষণ সুন্দরী। আপনার ভক্ত-অনুরাগীদের নিয়েও তো আপনি আবেগপ্রবণ? অভিনেত্রী বলেন,  হ্যাঁ। ওদের ভালোবাসা পেয়ে আমি সত্যিই নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। জীবনে হয়তো অনেক ঝুট-ঝামেলা দেখেছি, কিন্তু দর্শকদের নিঃশর্ত ভালোবাসা পাওয়াটাই থেকে যাবে।

প্রেম তো করবেন? এ বিষয়ে শ্রাবন্তী বলেন, প্রেমে তো থাকিই। কিন্তু সমস্যাটা হচ্ছে— ভবিষ্যৎ ভাবতে শুরু করে দেয় সবাই। আমার একটু সময় লাগে সবকিছুতে। তিনি বলেন, প্রত্যেকের বাঁচার অধিকার রয়েছে। সে কীসে ভালো থাকবে, সেটি তো তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তা না— তিন-চারটা বিয়ে, সমাজের কত চোখরাঙানি! আমার কিচ্ছু এসে-যায় না!

বাংলাস্কুপ/ডেস্ক/এনআইএন/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ